Top Ad unit 728 × 90

সর্বশেষ আপডেট

recent

ঘড়ির কাঁটা কেন ডান থেকে বাম দিকে ঘুরে?

ঘড়ি জিনিসটা আমাদের অতিপরিচিত আর অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। কখনো দেওয়ালের দিকে তাকালে, কিংবা হাতের দিকে তাকালে এমনকি সর্বক্ষণের সঙ্গী মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকালেও দেখা যায় সময় দিতে থাকা এই বস্তুকে। দুই প্রকারের ঘড়ি আমরা হরহামেশা দেখি, কাঁটাযুক্ত ঘড়ি বা অ্যানালগ ঘড়ি আর আরেকটা হলো সংখ্যাবিশিষ্ট ঘড়ি বা ডিজিটাল ঘড়ি।
কাঁটাযুক্ত ঘড়িগুলোতে ৩টা কাঁটা থাকে এবং তিনটাই ডান দিক থেকে বাম দিকে ঘুরে। কিন্তু অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় আমাদের কারোরই একটা প্রশ্ন মাথায় আসে না, ঘড়ির কাঁটা কেন ডান দিকে ঘুরে? ব্যাপারটা খোলাসা করা যাক।
আগেকার দিনে সূর্য দেখে মানুষ সময় নির্ণয় করত। জ্বি হ্যাঁ, আমি সূর্যঘড়ির কথা বলছি। সেগুলো থেকে আমাদের বর্তমান ঘড়ির পার্থক্য হলো সেগুলো ছায়া সরে গিয়ে সময়ের জানান দিত, আর আমাদের ঘড়ির কাঁটা সরে গিয়ে সময়ের জানান দেয়। সূর্যঘড়ির ইতিহাস বেশ পুরনো, সবচেয়ে প্রাচীন ঘড়ি, মানে সবচেয়ে পুরোনো সূর্যঘড়ির মর্যাদা পায় মিশরীয়দের ওবেলিস্ক।
ধারণা করা হয়, মিশরীয়রা এই ঘড়ি বানানো শিখেছিলো খ্রিস্টের জন্মেরও সাড়ে তিন হাজার বছর আগে। আর এরকম আরেকটা ঘড়িকে বলা হয় ‘শ্যাডো ক্লক’। ওটা
বানিয়েছিলো ব্যবিলনীয়রা, খ্রিস্টের জন্মের প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। জেনে রাখা ভালো ক্লক নামটা খুব বেশি পুরনো না, মাত্র ৭০০ বছর আগে লাটিন ক্লক্কা থেকে এসেছে ক্লক শব্দটা।
অনেক জ্ঞানের কথার মাঝে একটা গল্প শোনা যাক। মাচুপিচুর চূড়াতে একটি পাথর আছে নাম ইউতিয়ানা যেটি দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে পূজিত পাথরগুলোর একটি। স্থানীয় ব্যক্তিদের ধারণা এর মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জগতকে দেখা যায়। আদতে এটি একটি সূর্যঘড়ি। ২০০০ সাল পর্যন্তও এটির অস্তিত্ব অক্ষত ছিলো। কিন্তু সে বছর একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করতে গিয়ে ৯৯০ পাউন্ড ওজনের পাথর পরে জিনিসটা গেঙ্গে যায়,
আর অধিবাসীদের মতে আত্মারা ইউতিয়ানা ছেড়ে চলে যায়।
এখন কথা হলো সূর্যঘড়ির কথা কেন আসলো এবং ঘড়ির কাঁটা ডান দিকে যাওয়ার সাথে এর সম্পর্ক কী? লক্ষ্য করলেই দেখা যায় উল্লেখিত অঞ্চলগুলো সব একই দিকে বা আসলে ব্যাপারটা মূলত ঘটে উত্তর মেরুতে (নক্ষত্রের হিসাবে)। আর সেখানে দেখা যেত ছায়া পূর্ব হতে পশ্চিম দিকে ঘুরছে, অর্থাৎ ডান থেকে বাম দিকে। সেই থেকে চলে আসলো চিরচেনা আমাদের এই ঘড়ির নিয়ম। তবে ব্যাপারটা যদি দক্ষিন গোলার্ধে হত তবে ঘটত সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা। তাদের সময় নির্দেশক এই ঘড়ির দন্ডটির নাম হলো নমন (Gnomon)।
কাহোকিয়াবাসীরা ঋতু, বছর এবং বিশেষ বিশেষ দিনগুলোর হিসেব রাখত মঙ্কস মাউন্ডসের (Monks Mound) আধ মাইল পশ্চিমে থাকা সূর্যঘড়ি `The woodhenge sun calender’ এর সাহায্যে। বড় বড় সমান মাপের ৪৮টা সিডার কাঠের পোস্ট সমান দূরত্বে পর পর বসিয়ে বৃত্তাকারে এই সূর্যঘড়ি তৈরি করা হয়েছিলো। ৪১০ ফুট ব্যাসযুক্ত এই বৃত্তের ঠিক মধ্যখানে আছে অবজারভেশন পোস্ট। দিন গণনা, সূর্যের উদয়স্ত, দক্ষিণায়ন, উত্তরায়ন ইত্যাদি বুঝতে এই সূর্যঘড়ি কাহোকিয়া বাসীদের সহায়ক ছিলো। এটা তাদের উন্নত বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তির উত্তম নিদর্শন। ১৯২০ সালে কাহোকিয়া মাউন্ডস আবিষ্কৃত হয়। ১৯৮২ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক এটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
এ ধরনের ঘড়িতে যে সমস্যা হত সেটা হলো কোনো মিনিট সেকেন্ডের হিসাব থাকত না। সকল সমস্যার সমাধান ঘটিয়ে ১৬৫৭ সালে ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিশ্চিয়ার হাইজেন্স (Christian Huygens) সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে মিনিট, সেকেন্ড ও ঘন্টা নির্দেশকারী উন্নত মানের যান্ত্রিক ঘড়ির নকশা করেন।

ঘড়ির কাঁটা কেন ডান থেকে বাম দিকে ঘুরে? Reviewed by Brandon on 09:12 Rating: 5

No comments:

সর্ব সর্ত সংরক্ষিত Welcome to Bdsourceing.blogspot.com © ২০১৫
ডিজাইন করেছেন রাকিবুল হাসান বিজয়

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.